বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের বিচারের সাক্ষ্যপ্রমাণই বলে জিয়া যুক্ত ছিল :তথ্যমন্ত্রী

1983
শেয়ার করতে ক্লিক করুন

নিজস্ব প্রতিবেদক:
‘বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের বিচারের সাক্ষ্যপ্রমাণই বলে দেয় জিয়াউর রহমান হত্যাকান্ডে যুক্ত ছিল এবং তার সম্পৃক্ততা দিবালোকের মতো স্পষ্ট’ বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড.হাছান মাহমুদ। বুধবার দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরের (ডিএফপি) নবারুণ ও সচিত্র বাংলাদেশ মাসিক পত্রিকা দু’টির মুজিববর্ষ সংখ্যার মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের তিনি একথা বলেন। সচিব মো: মকবুল হোসেনের সভাপতিত্বে তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা: মুরাদ হাসান বিশেষ অতিথি হিসেবে এবং ডিএফপি’র মহাপরিচালক স. ম. গোলাম কিবরিয়া অনুষ্ঠানে সূচনা বক্তব্য রাখেন।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের মন্তব্য ‘জিয়া নয়, বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডে আওয়ামী লীগ জড়িত’ এর জবাবে ড. হাছান বলেন, ফখরুল সাহেবরা প্রতিবছর আগস্ট মাস এলেই এ কথাগুলো বলেন। বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের বিচারের সময় সাক্ষী ও আসামীরা যে জবানবন্দি দিয়েছে সেগুলো রেকর্ডেড। তারা জবানবন্দিতে স্পষ্টভাবে বলেছে কখন, কোথায় জিয়াউর রহমানের সাথে বৈঠক হয়েছে, জিয়াউর রহমান কি বলেছে, কিভাবে সম্মতি দিয়েছে। তার সম্পৃক্ততা দিবালোকের মতো স্পষ্ট।

মন্ত্রী বলেন, আমি মির্জা ফখরুলকে বলবো যে এ ধরণের জঘন্য মিথ্যাচার পরিহার করে বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের বিচারের ‘প্রসিডিং’টা পড়ার জন্য অনুরোধ জানাবো, প্রয়োজনে বিচারের বৃত্তান্ত জনসম্মুখে নিয়ে আসবো। তাহলে মানুষ জানতে পারবে আসামীরা তাদের জবানবন্দিতে কি স্বীকার করেছে। ‘জিয়াউর রহমান যে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার সাথে যুক্ত ছিল এটা কর্ণেল ফারুক এবং রশিদ দু’জনই ১৯৭৬ সালে আগস্ট মাসে যুক্তরাজ্যের একটি টেলিভিশনে চ্যানেলের সাথে সাক্ষাৎকার দিয়ে স্বীকার করেছে’ উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘জিয়া যদি মোশতাকের আস্থাভাজনই না হয়, তাহলে বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের পর জিয়াউর রহমানকে কেন সেনাপ্রধান করা হলো? বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের সবচাইতে বড় সুবিধাভোগী হচ্ছে জিয়াউর রহমান এবং তার পরিবার।’

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘জিয়াউর রহমান শুধু বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের সাথে যুক্ত ছিল তা নয়, জিয়াউর রহমান মুক্তিযুদ্ধের ছদ্মাবরণে পাকিস্তানিদের দোসর ছিল। মুক্তিযুদ্ধের সময় কারো বাড়িতে কোনো মুক্তিযোদ্ধা আশ্রয় বা খাবার পেয়েছে জানতে পারলেই পাকিস্তানি সেনা কিম্বা রাজাকার, আলবদররা সেই বাড়ি জ্বালিয়ে দিয়েছে, নির্যাতন করেছে। আর জিয়াউর রহমান রণাঙ্গণে মুক্তিযুদ্ধ করে আর তার স্ত্রী এবং পুত্ররা পাকিস্তানিদের কাছে মেহমানের মতো থাকে, এ থেকেই তো গোমরটা বোঝা যায়, আসলে জিয়াউর রহমান কি ছিল। এবং মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন জিয়াউর রহমানের কাছে পাকিস্তানি কর্নেল বেগের যে চিঠিতে লেখা ‘তুমি চিন্তা করো না, তোমার স্ত্রী-পুত্ররা ভালো আছে এবং তোমার কাজে আমরা সন্তুষ্ট’ এগুলো অস্বীকার করার উপায় নেই। তাই মিথ্যার ওপরেই দাঁড়িয়ে আছে বিএনপি। মিথ্যার ওপর দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে এখন তাদের দলও ছোট হয়ে আসছে।’

মন্ত্রী এসময় নবারুণ ও সচিত্র বাংলাদেশ মাসিক পত্রিকার মুজিববর্ষ সংখ্যা প্রকাশের জন্য চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, নতুন প্রজন্মের সামনে বঙ্গবন্ধুকে তুলে ধরার জন্য এ প্রকাশনাগুলো অত্যন্ত গুরুত্ববহ। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বেই বাঙালি জাতি, জাতি সত্তা সৃষ্টি হওয়ার পর প্রথম বাংলাদেশ নামের এ রাষ্ট্রের রচনা করেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বাঙালিদের জন্য পৃর্থিবীতে এটিই একমাত্র জাতি রাষ্ট্র। তাই বঙ্গবন্ধুকে এবং তার আদর্শকে জানা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো: মিজান-উল-আলম এবং খাদিজা বেগম, বাংলাদেশ টেলিভিশনের মহাপরিচালক সোহরাব হোসেন, প্রধান তথ্য অফিসার মো: শাহেনুর মিয়া, বাংলাদেশ বেতারের মহাপরিচালক আহম্মদ কামরুজ্জামান, গণযোগাযোগ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বিধান চন্দ্র কর্মকার, প্রেস ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ এর মহাপরিচালক জাফর ওয়াজেদ, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন ইনস্টিটিউটের প্রধান নির্বাহী মো: আবুল কালাম আজাদ, বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভের মহাপরিচালক মো: নিজামুল কবীর, বাংলাদেশ ফিল্ম সেন্সর বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান মো: জসীম উদ্দিন, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার ব্যবস্থাপনা সম্পাদক আনিসুর রহমান প্রমুখ এসময় উপস্থিত ছিলেন।

শেয়ার করতে ক্লিক করুন