সারাদেশে একযোগে শুরু গণটিকা কার্যক্রম

1542
শেয়ার করতে ক্লিক করুন

সারাদেশে একযোগে শুরু হয়েছে গণটিকা কার্যক্রম। শনিবার (০৭ আগস্ট) থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সারাদেশে ভ্যাকসিনেশন ক্যাম্পেইন পরিচালনা করছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহর এবং গ্রামাঞ্চলে ৬১ হাজার ২০০ সাধারণ মানুষকে করোনারভাইরাস নিরোধ গণটিকা দেওয়া শুরু হয়েছে। সকাল সাড়ে ৯টা থেকে এ কার্যক্রম শুরু হয়ে চলবে বিকেল ৩টা পর্যন্ত। জেলার ১১০টি টিকাদান কেন্দ্রের ৩০৬টি বুথে করোনার টিকার এ কার্যক্রম চলছে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডের হুমায়ুন কবীর পৌর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের টিকা কেন্দ্র গিয়ে দেখা গিয়েছে সাধারণ মানুষের উপচে পড়া ভিড়। সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে নারী-পুরুষসহ ২৫ বছরের বেশি বয়সীরা টিকা গ্রহণ করছেন। টিকা নেওয়া শেষে স্বস্তির কথা প্রকাশ করেছেন তারা।
লক্ষণ সাহা নামে এক ব্যক্তি জানান, দেরিতে হলেও নিজের এলাকাতেই টিকা দিতে পেরেছি এটাই বড় কথা। এতোদিন যারা টিকা নিতে চাননি তারাও টিকা নেয়ার জন্যে রেজিস্ট্রেশন করেছেন। এভাবে যদি পুরো দেশে টিকা কার্যক্রম চলে তাহলে হয়তো আমরা সহসাই এ দুঃসময় কাটিয়ে উঠতে পারবো।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর সভার ৪নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও পৌরসভার প্যানেল মেয়র মিজানুর রহমান আনসারী জানান, প্রথম দিনেই সাধারণ মানুষের ব্যাপক সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। অনেকেই টিকা নিতে টিকাদান কেন্দ্রে আসছেন। তবে আজ প্রথম দিনে যারা কেবল নিবন্ধন করেছেন তাদেরকেই টিকা দেয়া হবে।

তিনি আরো জানান, এ ওয়ার্ডে মোট ২০০জনকে টিকা দেওয়া হবে। পৌরসভার মোট ১২টি ওয়ার্ডে মোট ২হাজার ৪০০ জন নিবন্ধিত নাগরিককে এ টিকা দেয়া হবে। পরবর্তী সময়ে আগামী ১৪ আগস্ট থেকে এনআইডি কার্ডের মাধ্যমে টিকাদান কার্যক্রম চলবে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, জেলার ৯টি উপজেলার ৯৮টি ইউনিয়ন এবং পৌরসভার ১২টি ওয়ার্ডে ১১০টি কেন্দ্রে ৩০৬টি বুথে এসব টিকা দেওয়া হচ্ছে।
চুয়াডাঙ্গা: চুয়াডাঙ্গায় করোনা ভ্যাকসিনেশন ক্যাম্পেইন ও গণটিকা কার্যক্রম শুরু হয়েছে। সকাল থেকেই করোনাভাইরাস প্রতিরোধের জন্য ভ্যাকসিন নিতে কেন্দ্রগুলোতে নারী-পুরুষরা ভিড় করছেন।

সকাল ১০টায় চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন অফিসের আয়োজনে প্রভাতী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্কুলে ভ্যাকসিন কার্যক্রম শুরু হয়। জেলার চারটি উপজেলায় ৫৪টি কেন্দ্রের ১১৯টি বুথে ২৩ হাজার ৯০০জন সাধারণ মানুষকে করোনাভাইরাস প্রতিরোধের ভ্যাকসিন দেওয়া হবে।

মৌলভীবাজার: মৌলভীবাজার পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডে করোনাভাইরাসের গণটিকা কার্যক্রমের শুরু হয়েছে।
সকাল ৯টায় সৈয়দ শাহ মোস্তফা কলেজে মৌলভীবাজার পৌরসভার আয়োজনে ও জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সহযোগিতায় এ গণটিকা কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন মৌলভীবাজার-৩ আসনের সংসদ সদস্য নেছার আহমদ।
তিনি বলেন, টিকা দিতে গিয়ে কারো গুজবে কান দেবেন না। পর্যাপ্ত পরিমাণ টিকা মজুদ রয়েছে।

জেলা সিভিল সার্জন জানান, মৌলভীবাজার জেলার পাঁচটি পৌরসভার নয়টি ওয়ার্ডে ও ৬৭ ইউনিয়নের তিনটি বুথে একযোগে টিকা দেওয়া হচ্ছে। বেলা দুইটা পর্যন্ত এ টিকা গ্রহণ চলবে। পৌরসভার সবকটি ওয়ার্ডে সকাল থেকেই উৎসবমুখর পরিবেশে সাধারণ মানুষকে এ গণটিকা গ্রহণ করতে দেখা গেছে। টিকা নিতে পারায় অনেকেই খুশি।
এছাড়াও নেত্রকোনা, নড়াইলে বাগেরহাটসহ দেশের সব জায়গাতে এ কার্যক্রম চলছে।

প্রসঙ্গত: সারাদেশের ৪ হাজার ৬০০টি ইউনিয়ন, ১ হাজার ৫৪টি পৌরসভা ও ১২টি সিটি করপোরেশনের ৪৩৩টি ওয়ার্ডে করোনার টিকা দেয়া হবে। প্রাথমিকভাবে ৩২ লাখ মানুষকে টিকা দেয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে অধিদপ্তর। এ ক্যাম্পেইনের কার্যক্রমে ৩২ হাজার ৭০৬ জন টিকাদানকারী এবং ৪৮ হাজার ৪৫৯ জন স্বেচ্ছাসেবী নিয়োজিত রয়েছেন।

রাজধানীর মহাখালীতে বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিশিয়ানস অ্যান্ড সার্জনসের (বিসিপিএস) সভাকক্ষে শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশিদ আলম এসব কথা জানান।

তিনি বলেন, ৭ আগস্ট থেকে শুরু হওয়া ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে মূলত ২৫ বছরের বেশি বয়সী জনগোষ্ঠীকে টিকার আওতায় নিয়ে আসা হবে। তবে এ ক্ষেত্রে পঞ্চাশোর্ধ জনগোষ্ঠী, নারী, শারীরিক প্রতিবন্ধী এবং দুর্গম ও প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষকে অগ্রাধিকার দেয়া হবে।

ক্যাম্পেইন কার্যক্রমের আওতায় ৭ আগস্ট দেশের সব ইউনিয়ন, পৌরসভা ও সিটি করপোরেশনে টিকা কার্যক্রম শুরু হবে। ইউনিয়ন ও পৌরসভার যেসব ওয়ার্ডে সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির কারণে ৭ আগস্ট করোনার টিকা দেয়া সম্ভব হবে না, এসব জায়গায় ৮ ও ৯ আগস্ট টিকা দেয়া হবে।

তবে ৭ থেকে ৯ আগস্ট এই তিনদিন সিটি করপোরেশন এলাকায় ভ্যাকসিনেশন চলবে। ৮ ও ৯ আগস্ট দুর্গম ও প্রত্যন্ত এলাকায় টিকা দেয়া হবে। আর ১০ থেকে ১২ আগস্ট ৫৫ বছরের বেশি বয়সী মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর মাঝে টিকাদান কার্যক্রম চলবে।

শেয়ার করতে ক্লিক করুন