দেশজুড়ে সিরিজ বোমা হামলার বিচার হয়নি ১৬ বছরেও

1490
শেয়ার করতে ক্লিক করুন

দেশজুড়ে সিরিজ বোমা হামলার ১৬ বছর পূর্ণ হলো আজ। ১৬ বছর আগে এই দিনে মুন্সিগঞ্জ বাদে দেশের ৬৩টি জেলায় একযোগে পাঁচ শতাধিক বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে নিজেদের অস্তিত্বের জানান দিয়েছিল জেএমবি (জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ)। আর এই ১৬ বছরেও শেষ হয়নি ১৭ আগস্টে সিরিজ বোমা হামলার ঘটনায় ঢাকার আদালতে দায়ের করা ৫ মামলা। আর সারাদেশে বিচারাধীন রয়েছে ৪৩টি মামলা।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বলছেন, বিচার প্রায় শেষ পর্যায়ে হলেও সাক্ষী না আসায় দেরি হয়েছে। গত দেড় বছরে অন্যান্য মামলার মতো এই মামলার বিচারও করোনায় বাধাগ্রস্ত।

১৯৯৮ সালে দেশে সংগঠিত হয় জামায়াতুল মুজাহিদীন বা জেএমবি। পরে ২০০৫ সালে নিজেদের অবস্থান জানান দিতে ৬৩ জেলায় একযোগে বোমা হামলা চালায় তারা। এই বোমা হামলায় দুজন নিহত ও ১০৪ জন আহত হন। অন্যান্য জঙ্গি হামলার তুলনায় ক্ষয়ক্ষতি কম হলেও এই ঘটনায় ব্যাপকভাবে আলোচনায় আসে জেএমবি।

এরপর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অভিযান শুরু করলে জেএমবি কয়েকটি জেলায় আত্মঘাতী বোমা হামলা চালায়। অবশ্য মাস ছয়েকের মধ্যে জেএমবির সাংগঠনিক নেটওয়ার্ক অনেকটাই ভেঙে যায়। গ্রেপ্তার হন এর প্রতিষ্ঠাতা শায়খ আবদুর রহমান এবং শীর্ষস্থানীয় নেতা সিদ্দিকুল ইসলাম ওরফে বাংলা ভাইসহ তখনকার গুরুত্বপূর্ণ সব নেতা। ২০১৭ সালে শায়খ আবদুর রহমান, বাংলা ভাইসহ শীর্ষ পাঁচ নেতার ফাঁসির রায় কার্যকর হয়।

হামলার ঘটনায় সারাদেশে ১৫৯টি মামলা হয়। যার মধ্যে বিচার শেষ হয়েছে ১১৬টির। এখনও বিচারাধীন ৪৩ মামলা। এসব মামলায় ৩২২ আসামিকে সাজা দেয় আদালত। খালাস দেয়া হয় ৩৫৮ জনকে।

সর্বশেষ চারটি মামলার রায় হয় গত ফেব্রুয়ারিতে। তাতে ১৭ জনের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা হয়। খালাস পান একজন। আসামিদের পূর্ণাঙ্গ নাম-ঠিকানা না পাওয়ায় পুলিশ ইতিপূর্বে ১৬টি মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছে। এখনো বিচারাধীন আছে ৪৩টি মামলা। এর মধ্যে ঢাকার আদালতে রয়েছে পাঁচটি মামলা।

বিচার শেষ হতে বিলম্বের কারণ জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আবদুল্লাহ আবু জানান, এসব মামলার বিচার শেষ করতে তাদের কোন গাফিলতি নেই। করোনা পরিস্থিতির কারণে অনেক দিন আদালত বন্ধ ছিল। এখন আদালত খুলছে। মূলত সাক্ষী হাজির করতে দেরি হওয়ায় ঝুলে আছে বিচারকাজ। তবে, অভিযোগ নাকচ করে দিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

জঙ্গি হামলায় নিহত হন দুই বিচারক সোহেল আহমেদ ও জগন্নাথ পাঁড়ে। ওই মামলায় জেএমবির শীর্ষস্থানীয় নেতা শায়খ আব্দুর রহমান, সিদ্দিকুল ইসলাম বাংলাভাইসহ ৮ জঙ্গির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।

শেয়ার করতে ক্লিক করুন