ক্রাইস্টচার্চ টেস্ট: ইনিংস ব্যবধানেই হারল বাংলাদেশ

1503
শেয়ার করতে ক্লিক করুন

বিদায়টা স্মরনীয় করে রাখলেন রস টেলর। বাংলাদেশের শেষ উইকেটটা শিকার করে দলকে এনে দিলেন ইনিংস ব্যবধানে জয়ের স্বাদ। সেই সঙ্গে দীর্ঘ ১৫ বছরের টেস্ট ক্যারিয়ারে ইতি টানলেন এই কিউই কিংবদন্তী ক্রিকেটার। এবাদত হোসেনকে যখন আউট করলেন, তখন সাদা পোশাকে তার উইকেট সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল তিনটিতে।

টেলরের বিদায়ী ম্যাচে বাংলাদেশ ইনিংস ও ১১৭ রানে পরাজয়ের মুখ দেখল। ফলে ১-১ ব্যবধানে ড্র হলো দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ। দ্বিতীয় ইনিংসে কিউইদের হয়ে কাইল জেমিসন একাই নিয়েছেন ৪ উইকেট। নেইল ওয়্যাগনারের শিকার তিনটি। বাংলাদেশের হয়ে একমাত্র সফল ব্যাটার লিটন দাস করেছেন ১০২ রান।

ফিরলেন লিটন, ইনিংস পরাজয়ের অপেক্ষায় বাংলাদেশ

আম্পায়ার্স কলের খেসারত দিয়ে দুর্দান্ত এক ইনিংসের সমাপ্তি ঘটলো লিটন কুমার দাসের। কাইল জেমিসনের বলে ফিরলেন ১০২ রানের দৃষ্টিনন্দন এক ইনিংস খেলার পর। ফলে ২৬৯ রানে অষ্টম উইকেটের পতন ঘটলো বাংলাদেশের। ইনিংস ব্যবধানে পরাজয় এড়াতে এখনো ১২৬ রান যোগ করতে হবে সফরকারীদের। দিনের আরও ১৩ ওভার বাকি।

লিটন ফেরার পর বেশিক্ষণ থিতু হতে পারেননি শরিফুল ইসলাম। সেই জেমিসনের বলেই শূন্যতে ফিরেছেন এই পেস বোলার। ফলে বাংলাদেশের ইনিংস ব্যবধানে পরাজয়টা এখন কেবলই সময়ের ব্যাপার।

ওয়ানডে মেজাজে সেঞ্চুরি তুলে নিলেন লিটন

একদিকে ব্যাটারদের আসা-যাওয়ার মিছিল, অন্যদিকে স্বভাবসুলভ লিটন দাস। ব্যাটিং শৈলীতে চার-ছয়ের বৃষ্টি নামিয়ে মাত্র ১০৬ বলে তুলে নিলেন টেস্ট ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। এই মাইলফলক পূর্ণ করতে ১৪ বাউন্ডারির সঙ্গে রয়েছে একটি ওভারবাউন্ডারিও। মূলত তার ব্যাটেই এখনো ইনিংস ব্যবধানে হার এড়ানোর চেষ্টায় বাংলাদেশ দল।

সবশেষ পাকিস্তান সিরিজে নিজের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছিলেন লিটন। এই নিয়ে টানা দ্বিতীয় সিরিজে তিন অঙ্কের রান করলেন এই ব্যাটার। তবে ইনিংস হার এড়াতে এই সেঞ্চুরি যথেষ্ট নয়।

হাতে থাকা তিন উইকেট নিয়ে এখনো ১২৭ রানে পিছিয়ে বাংলাদেশ। সেঞ্চুরিয়ান লিটনের বর্তমান সঙ্গী তাসকিন আহমেদ। বাংলাদেশের দলীয় সংগ্রহ ২৬৮ রান। দিনের এখনো বাকি প্রায় ১৫ ওভার।

আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে হাফ সেঞ্চুরি লিটনের

ব্যাটারদের ব্যর্থতার দিনে টেস্ট ক্যারিয়ারের ১২তম হাফ সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন লিটন দাস। কাইল জেমিসনকে চার মেরে ৬৯ বলে হাফ সেঞ্চুরি করেন ডানহাতি এই ব্যাটার। তবে ফিফটি পূর্ণ করেই আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে মনোনিবেশ করেন তিনি। এরপরের ওভারেই ট্রেন্ট বোল্টের এক ওভারে হ্যাটট্রিকসহ হাঁকান চার বাউন্ডারি।

মারকুটে এই ব্যাটিংয়ে মাত্র ৮০ বলে লিটনের ব্যক্তিগত সংগ্রহ পৌঁছেছে ৬৯-এ। ক্রাইস্টচার্চে ১০ চার আর ১ ছয়ে এই রান করেছেন তিনি। এছাড়া নুরুল হাসান সোহানকে নিয়ে পার করেছেন শত রানের জুটি। ৪৮ বলে ৩৬ রান করে অন্যপ্রান্ত সামাল দিচ্ছেন এই উইকেটরক্ষক ব্যাটার।

বাংলাদেশকে আশা দেখাচ্ছে সোহান-লিটন জুটি

টপ অর্ডারের ব্যাটিং ব্যর্থতার পর ইনিংস পরাজয় এড়াতে লড়ছেন লিটন দাস ও নুরুল হাসান সোহান। এই দুজনের পঞ্চাশোর্ধ্ব জুটিতে ব্যবধান কমাচ্ছে বাংলাদেশ। যদিও তৃতীয় দিনের বাকি এখনো ত্রিশ ওভারের বেশি।

ওয়্যাগনার-জেমিসনদের বাউন্সার সামলে কিছুটা মারকুটে ভঙ্গিতেই খেলে যাচ্ছে এই জুটি। ৫ চার আর ১ ছয়ে ৬৮ বলে ৪৮ এ টিকে আছেন লিটন। অন্যদিকে সোহান কিছুটা আগ্রাসী ভূমিকায়। ৫ বাউন্ডারিতে ৩৬ বলে ২৫ রান তার। বাংলাদেশের দলীয় সংগ্রহ ১৯৭, হাতে আছে এখনো পাঁচ উইকেট।

ওয়্যাগনার ধাক্কার পর চা বিরতিতে বাংলাদেশ

চা বিরতিতে যাওয়ার আগের সেশনটা ভালো যায়নি বাংলাদেশের। এই সেশনের ২৫ ওভারে সফরকারীরা হারিয়েছে ৩ উইকেট, রান এসেছে ৫৮টি। যেখানে দুটি উইকেট একাই নিয়েছেন নেইল ওয়্যাগনার। ফলে ক্রাইস্টচার্চ টেস্টে ইনিংস ব্যবধানে হারের শঙ্কা জেগেছে টাইগার শিবিরে।

তৃতীয় দিনের শুরুর সেশনটা ইতিবাচক করলেও ভাঙন ধরেছে টপ অর্ডারে। দলীয় ১২৮ রানে নেই প্রথম পাঁচ ব্যাটার। ইনিংস পরাজয় এড়াতে এখনো বাংলাদেশের দরকার ২৪৩ রান। উইকেটে আছেন লিটন দাস ও নুরুল হাসান সোহান।

৩৯৫ রানে এগিয়ে থেকে বাংলাদেশকে অনুমিতভাবেই ফলো-অন করান কিউই অধিনায়ক টম ল্যাথাম। সর্বশেষ ৩ টেস্টের মাঝে এ নিয়ে দ্বিতীয়বার ফলো-অনে পড়ল বাংলাদেশ। এর আগে সর্বশেষ পাকিস্তানের বিপক্ষে ইনিংস ব্যবধানে হেরেছিল তারা।

ইনিংসের প্রথম বলেই টিম সাউদিকে ডাউন দ্য লেগে চার মেরে শুরু করা সাদমান ছিলেন ইতিবাচকই। এরপর সাউদি ও জেমিসনকে কাভার ড্রাইভে দুটি চার মারেন। প্রথম ইনিংসের চেয়ে আগেভাগেই বোলিংয়ে প্রথম পরিবর্তন আনতে হয় ল্যাথামকে। দশম ওভারে আসেন কাইল জেমিসন, প্রথম ব্রেকথ্রুও দেন তিনি।

২৭ রানে প্রথম উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ৪৮ বলে ২১ রান করে ফিরতে হয় বাঁহাতি উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান সাদমান। দলের দ্বিতীয় উইকেটের পতন ঘটে ৭১ এ। ৩৬ বলে ২৯ রান করে ফেরেন নাজমুল শান্ত। তাকে শিকারে পরিণত করেন ওয়্যাগনার।

অভিষিক্ত নাঈম শেখ প্রথম ইনিংসে রানের খাতা খুলতে না পারলেও দ্বিতীয় ইনিংসে উইকেটে টিকে ছিলেন বেশ কিছুক্ষণ। সাউদির বলে আউট হওয়ার আগে ৯৮ বলে ২৪ রান আসে তার ব্যাট থেকে। আর ১২৩ এ বিদায় নেন মুমিনুল হক। ওয়্যাগনারের বলে স্লিপে যখন সহজ ক্যাচ তুলে দেন, তখন তার ব্যক্তিগত সংগ্রহ ৩৭।

এদিন আশা দেখাতে পারনেনি প্রথম ইনিংসে হাফ সেঞ্চুরি করা ইয়াসির আলী রাব্বি। শর্ট বলে বরাবরই নড়বড়ে এই ব্যাটার পরাস্ত হয়েছেন ওয়্যাগনারের বাউন্সারে। শুরুতেই একবার জীবন পেলেও দ্বিতীয়বার বাঁচতে পারেননি। ২ রান করা রাব্বির ক্যাচ তালুবন্দী করেন লাথাম।

শেয়ার করতে ক্লিক করুন