![Pro-Russian activists react in a street in Donetsk](https://i0.wp.com/www.newsgardenbd.com/wp-content/uploads/2022/02/61380.jpg?resize=696%2C392&ssl=1)
ইউক্রেন নিয়ে তীব্র উত্তেজনার মধ্যেই দেশটির দুটি বিচ্ছিন্ন অঞ্চল দোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। সোমবার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেয়া ভাষণে ওই অঞ্চলে শান্তি বজায় রাখতে সেনা মোতায়েনের নির্দেশ দেন তিনি।
এসময় পুতিন বলেন, “এ সিদ্ধান্ত আরও আগেই নেয়া উচিত ছিল। আর তা হলো দোনেৎস্ক পিপলস রিপাবলিক ও লুহানস্ক পিপলস রিপাবলিকের স্বাধীনতা ও সার্বভোমত্বের স্বীকৃতি দেয়া। আমি রাশিয়ার ফেডারেল অ্যাসেম্বলিকে এ সিদ্ধান্তকে সমর্থন করতে এবং উভয় প্রজাতন্ত্রের বন্ধুত্ব ও পারস্পরিক সহায়তার চুক্তিগুলোকে অনুমোদন দিতে বলছি”।
১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার পর রাশিয়া ‘লুণ্ঠিত’ হয়েছে বলে অনুযোগ করেছেন তিনি। পুতুল সরকার দ্বারা পরিচালিত ইউক্রেইন একটি ‘যুক্তরাষ্ট্রের উপনিবেশে’ পরিণত হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। দেশটির বর্তমান নেতৃত্বের অধীনে জনগণ দুর্ভোগ পোহাচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
পুতিনের ঘোষণার পর এর প্রতিক্রিয়ায় গভীর রাতে টেলিভিশনে দেয়া এক ভাষণে ইউক্রেইনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, এতে তারা ভীত নয়। ইউক্রেনের সীমান্ত অপরিবর্তিত থাকবে।
তিনি বলেন, “কারা আমাদের প্রকৃত বন্ধু ও অংশীদার আর কে শুধু কথা দিয়ে রাশিয়াকে ভয় দেখানো অব্যাহত রাখবে, তা দেখা এখন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”
স্বঘোষিত গণপ্রজাতন্ত্র দোনেস্ক ও লুহানস্ক রাশিয়ার সমর্থনপুষ্ট বিদ্রোহীদের এলাকা। এই বিদ্রোহীরা ২০১৪ সাল থেকে ইউক্রেইনের বাহিনীগুলোর বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে আসছে। এই দুটি অঞ্চলে রাশিয়ার সেনাদের ‘শান্তিরক্ষা কার্যক্রম’ চালানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
তবে, এ ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা কাউন্সিলের সদস্যরা। এ ইস্যু নিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি বৈঠক চলছে।
অন্যদিকে পুতিনের এ সিদ্ধান্তে হতাশা প্রকাশ করেছেন ফ্রান্স ও জার্মানিসহ পশ্চিমা দেশের নেতারা। যুক্তরাষ্ট্র একে ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার লঙ্ঘন বলে উল্লেখ করেছে। হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, ‘রাশিয়া যদি এরপরও ইউক্রেইনে আগ্রাসন চালায়’ তাহলে পশ্চিমা দেশগুলো বিস্তৃত যেসব নিষেধাজ্ঞা দেয়ার প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে এসব পদক্ষেপ সেগুলো থেকে আলাদা।
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন রাশিয়ার পদক্ষেপকে ‘ইউক্রেইনের সার্বভৌমত্ব ও অখণ্ডতার নিদারুণ লংঘন’ বলে নিন্দা জানিয়েছেন এবং এটি আন্তর্জাতিক আইন ভঙ্গ করেছে বলে অভিযোগ করেছেন। এতে ইউক্রেনের স্বাধীনতা হুমকির মুখে পড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন।
যুক্তরাজ্য মঙ্গলবার রাশিয়ার বিরুদ্ধে নতুন নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করবে বলে জানিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
ইউক্রেইনের সীমান্তের চারদিকে রাশিয়ার দেড় লাখেরও বেশি সেনা সমর প্রস্তুতিসহ অবস্থান নিয়ে আছে। তবে, রাশিয়া কী করতে যাচ্ছে, তা নিয়ে সৃষ্ট উত্তেজনার মধ্যে ভ্লাদিমির পুতিনের এ পদক্ষেপ চলমান সংকটকে আরো গভীর করে তুলবে বলে মনে করছেন রাজনীতি বিশ্লেষকরা।