পুতিনের রাশিয়া যেসব যুদ্ধে জড়িয়েছে

799
শেয়ার করতে ক্লিক করুন

প্রায় দুই যুগ ধরে ক্ষমতায় রয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। দীর্ঘ ক্ষমতার এই সময়ে রাশিয়া বেশ কিছু যুদ্ধে জড়িয়েছে। ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে গেলে ক্ষমতায় আসেন পুতিন। মূলথ ন্যাটোর সদস্যপদ পাওয়া নিয়ে ইউক্রেনের রাশিয়ার সমস্যা শুরু হয়েছে। পূর্ব ইউক্রেনের রুশপন্থী বিদ্রোহীদের দুই অঞ্চল দোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দেওয়ার পরই রাশিয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জাপান ও কানাডা।

তবে এসব নিষেধাজ্ঞার তোয়াক্কা না করে নিজের মতো এগিয়ে যাচ্ছে রাশিয়া। ইউক্রেনের সঙ্গে রাশিয়ার এমন পরিস্থিতির কারণে ঘুরে যেতে পারে ইতিহাসের মোর।

রাশিয়া ইউক্রেনের আগেও বেশ কিছু দেশের সঙ্গে যুদ্ধ করেছে। সেসব যুদ্ধে রাশিয়ার কেমন পরিস্থিতি ছিল চলুন দেখে নেওয়া যাক-

চেচনিয়া যুদ্ধ: ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতন হয়। জন্ম নেয় ‘রাশিয়ান ফেডারেশন’। আর এ সুযোগে স্বাধীনতা ঘোষণা করে দেয় চেচনিয়া। কিন্তু ১৯৯৪ সালে ওই অঞ্চল ফিরে পেতে সেনা পাঠায় মস্কো। দীর্ঘ লড়াইয়ে পর ১৯৯৬ সালে পর্যুদস্ত হয় রুশ সেনারা। কিন্তু দমে যায়নি রাশিয়া। ১৯৯৯ সালে পুতিনের নেতৃত্বে আবার চেচনিয়ায় সৈন্য পাঠালে তুমুল যুদ্ধের পর ২০০০ সালে চেচনিয়ার রাজধানী গ্রোজনিকে ধুলায় মিশিয়ে দেয় রাশিয়ার সেনারা। রুশরা জয় পায় দ্বিতীয় চেচেন যুদ্ধে।

রাশিয়া-জর্জিয়া যুদ্ধ: ২০০৮ সালে জর্জিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ জড়ায় রাশিয়া। দক্ষিণ ওসেটিয়া নিয়ে শুরু হয় সংঘাত। অঞ্চলটির দখল ছিল রুশপন্থী বিচ্ছিন্নতাবাদীদের। হারানো এলাকার দখল ফিরে পেতে সেই বছরের আগস্টে অভিযান শুরু করে জর্জিয়ার সেনারা। রুশপন্থী বিদ্রোহীরা সহায়তায় পাল্টা হামলা চালায় রাশিয়ার সেনাবাহিনী। কয়েক দিনের যুদ্ধে পরাজয় হয় জর্জিয়ার।

সিরিয়ায় অভিযান: আইএস ও বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ২০১৫ সালে সেনা পাঠায় পুতিন। দেশটির প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের সেনাদের পক্ষ হয়ে প্রবল লড়াই চালিয়ে যায় রুশ যুদ্ধবিমানগুলো। সেখানেও নিজের অস্তিত্ব ধরে রাখতে সক্ষম হয় রাশিয়া। তখন রাশিয়ার সঙ্গে জোট বেধে ছিল ইরানও।

ক্রিমিয়া যুদ্ধ: সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার পর থেকেই মস্কোবিরোধী মনোভাব ইউক্রেনে প্রবল। ২০১৪ সালে ইউরোপের সহায়তায় আন্দোলনের ফলে গদি ছাড়তে হয় ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভিক্টর ইয়ানোকোভিচকে। জনতার রায়ে রাশ টানতে চেষ্টা চালায় রুশপন্থী ইয়ানোকোভিচ সরকার। কিন্তু শেষ রক্ষা আর হয় না। জবাবে ক্রিমিয়া উপদ্বীপ নিজেদের দখলর নেয় রাশিয়া। তবে পুতিনের এ উদ্যোগের কারণে ক্রিমিয়া বিশ্বে খুব বেশি স্বীকৃতি পায়নি।

ইউক্রেন-রাশিয়া সংঘাত: সাবেক সোভিয়েত সদস্যদেশ ইউক্রেন যোগ দিতে চায় ন্যাটো জোটে। আর এতে চটেছেন পুতিন। কারণ, এতে সীমান্তে ন্যাটো সৈন্যদের সমাবেশ ঘটবে। নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়বে রাশিয়ার। সাবেক সোভিয়েত সদস্যদেশটিকে কোনোভাবেই ন্যাটো জোটে যোগ দিতে দেবে না রাশিয়া।

সূত্র: আল-জাজিরা

শেয়ার করতে ক্লিক করুন