রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ: এরইমধ্যে ন্যাটোর সদস্য হতে চায় কসোভো

802
শেয়ার করতে ক্লিক করুন

যুদ্ধের মধ্যেই ন্যাটোর সদস্য হতে চায় কসোভো
নিজ দেশে স্থায়ী মার্কিন ঘাঁটির পাশাপাশি ন্যাটোর সদস্য পদের জন্য ওয়াশিংটনকে অনুরোধ জানাবে কসোভো। সোমবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) রুশ সংবাদমাধ্যম আরটি এ তথ্য জানিয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, গতকাল কসোভোর প্রতিরক্ষামন্ত্রী আরমেন্দ মেহাজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বলেন, ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রিসটিনার জন্য ‘ন্যাটোর সদস্য পদ ও মার্কিন সেনাদের স্থায়ী ঘাঁটি জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োজন। পশ্চিম বলকান ও এর আশপাশের অঞ্চলের নিরাপত্তা, শান্তি ও স্থিতিশীলতার’ জন্য (কসোভোয়) স্থায়ী মার্কিন ঘাঁটি দরকার বলে মন্তব্য করেন তিনি।

মেহাজ বলেন, ‘কসোভো প্রজাতন্ত্র ও এর জনগণ প্রমাণ করেছে যে তারা স্বাধীনতা, শান্তি ও গণতন্ত্রবিষয়ক ইউরো-আটলান্টিক মূল্যবোধ রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ যোদ্ধা। এসব মূল্যবোধের ওপর ন্যাটো প্রতিষ্ঠিত।’

এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন ন্যাটো সামরিক জোটের ৩০ সদস্য দেশের মধ্যে গ্রিস, রোমানিয়া, স্লোভাকিয়া ও স্পেন স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে কসোভাকে স্বীকৃতি দেয়নি। সেসব দেশের উদ্দেশে কসোভোর প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, যারা কসোভোকে স্বীকৃতি দিতে এখনো অনিচ্ছুক তাদের আর এ বিষয়ে ‘দ্বিধা করা’ ঠিক না।

২০০৮ সালে পশ্চিমের দেশগুলোর সামরিক সহায়তায় সার্বিয়া থেকে কসোভো স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। জাতিসংঘের অর্ধেকের বেশি সদস্য প্রিসটিনাকে স্বীকৃতি দিলেও রাশিয়া ও চীনসহ প্রভাবশালী কয়েকটি দেশ কসোভোকে সার্বিয়ার অংশ বলে মনে করে।

এদিকে রাশিয়ার ঘনিষ্ঠ মিত্র বেলারুশে স্থায়ীভাবে রুশ সেনা ও পরমাণু বোমা রাখার পক্ষে-বিপক্ষে ভোটাভুটি হয়েছে। ভোটাভুটি শেষে এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বেলারুশের কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, দেশটিতে স্থায়ীভাবে রুশ সেনা ও পরমাণু বোমা রাখার পক্ষে ভোট দিয়েছেন ৬৫ দশমিক ২ শতাংশ। আর বিপক্ষে ভোট পড়েছে ১০ দশমিক ৭ শতাংশ। সোমবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এ তথ্য জানিয়েছে।

এতে আরও বলা হয়, সাংবিধানিক সংস্কারের অংশ হিসেবে এ ভোট নেওয়া হয়। এর মাধ্যমে বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্ডার লুকাশেনকোর শাসনের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। নতুন সংবিধান অনুযায়ী ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর এ প্রথম বেলারুশে পরমাণু বোমা রাখার অনুমতি পেল।

এছাড়াও রাশিয়ার ছোড়া এক ক্ষেপণাস্ত্র ইউক্রেনের উত্তরাঞ্চলীয় শহর চেরনিহিভের একটি আবাসিক ভবনে আঘাত হেনেছে। ইউক্রেনের ন্যাশনাল নিউজ এজেন্সি (ইউক্রিনফর্ম) এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

সোমবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) বিবিসি জানায়, ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে ভবনটির নিচের ২ তলায় আগুন লেগেছে বলে ইউক্রিনফর্মের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। এদিকে রুশ বাহিনীর বিরুদ্ধে সফল ড্রোন হামলা চালানোর দাবি করেছে ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী। সোমবার মার্কিন সংবাদসংস্থা সিএনএনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

গতকাল রোববার ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনী একটি ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ করেছে, যেখানে তুরস্কে নির্মিত ড্রোন ব্যবহার করে রাশিয়ার বিইউকে সার্ফেস-টু-এয়ার মিসাইল সিস্টেম (স্থল থেকে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র বহনকারী সাঁজোয়া যান) ধ্বংস করতে দেখা গেছে।

ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনীর কমান্ডার-ইন-চীফ ভ্যালেরি ঝালুঝনি জানান, রাজধানী কিয়েভ থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার (৬২ মাইল) দূরে অবস্থিত ম্যালিন শহরে এ হামলা চালানো হয়।

ইউক্রেন সরকার গত বছর থেকে তুরস্কের কাছ থেকে বের‍্যাকটার টিবি২ মডেলের ড্রোন আনে।

এদিকে ইউক্রেনে চলমান সামরিক অভিযানের মধ্যেই পারমাণবিক অস্ত্রের দায়িত্বে থাকা বাহিনীকে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি রাখার নির্দেশ দিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন। এর মধ্যেই, ইউক্রেনকে অস্ত্র সরবরাহের ঘোষণা দিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। একই সঙ্গে রুশ বিমানের জন্য নিজেদের আকাশসীমা বন্ধ ঘোষণা করেছে পশ্চিমা দেশগুলো।

এ অবস্থায় সংঘাত বন্ধে রাশিয়ার সঙ্গে শর্তহীন আলোচনায় রাজি হয়েছে ইউক্রেন।

শেয়ার করতে ক্লিক করুন