রাশিয়ার অস্তিত্ব কি হুমকির মুখে?

555
শেয়ার করতে ক্লিক করুন

ফিনল্যান্ড ও সুইডেন ন্যাটোয় যোগ দিলে রাশিয়ার জন্য তা হবে পরাজয়। বিশ্লেষকরা বলছেন, নরডিক দেশ দুটি পশ্চিমা এই সামরিক জোটে যুক্ত হলে ন্যাটো সেনারা হাজির হবে রুশ-ফিনল্যান্ড সীমান্তে। বিষয়টিকে নিজেদের অস্তিত্বের জন্য হুমকি হিসেবে দেখছে খোদ ক্রেমলিনও। এমন পরিস্থিতির মধ্যেই বৃহস্পতিবার (১৯ মে) দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, সুইডেন ও ফিনল্যান্ডের ন্যাটোয় যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত মিত্র দেশগুলোর কাছে প্রশংসিত হলেও রাশিয়ার জন্য তা বিপদ ডেকে আনবে। নরডিক এই দেশ দুটির ন্যাটোয় যোগদান মস্কোর জন্য হবে পরাজয়। ন্যাটোর এই সম্প্রসারণে নিজেদের অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়বে বলে মনে করছে খোদ ক্রেমলিনও।

ফিনল্যান্ড ও সুইডেনের ন্যাটোয় যোগদানের ঘোষণা দেশে-বিদেশে পুতিনের জন্য আঘাত বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভের দাবি, ফিনল্যান্ড ও সুইডেনের ন্যাটোয় যোগ দেওয়া বড় কোনো পার্থক্য তৈরি করবে না। কারণ, দেশ দুটি অনানুষ্ঠানিকভাবে আগে থেকেই এই জোটের নানা কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত।

এদিকে চলমান উদ্বেগের মধ্যেই বৃহস্পতিবার (১৯ মে) ফিনল্যান্ড ও সুইডেনের দুই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। হোয়াইট হাউস জানায়, বৈঠকে দুই দেশের ন্যাটোয় যোগদানসহ ইউরোপের নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হবে।

নরওয়ে, ডেনমার্ক ও আইসল্যান্ডের মতো নরডিক দেশগুলো ন্যাটোর মূল সদস্য হলেও ঐতিহাসিক এবং ভূরাজনৈতিক কারণে আগে এই নিরাপত্তা জোটে যোগ দেয়নি সুইডেন ও ফিনল্যান্ড।

রুশ বিপ্লবের পর ১৯১৭ সালে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে জন্ম নেওয়া ফিনল্যান্ড গ্রহণ করে নিরপেক্ষ পররাষ্ট্রনীতি। স্নায়ুযুদ্ধের সময় সোভিয়েত ইউনিয়ন কিংবা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র–কোনো পক্ষে না গিয়ে একই পথ অনুসরণ করে সুইডেনও।

তবে ফিনল্যান্ডের জন্য বিষয়টি কঠিন ছিল। কারণ, কর্তৃত্ববাদী পরাশক্তি রাশিয়ার সঙ্গে দেশটির বিশাল সীমানা রয়েছে। ফলে শান্তি বজায় রাখার জন্য ‘ফিনল্যান্ডাইজেশন’ নামে একটি নীতি গ্রহণ করেন ফিনিশ নেতারা, যেখানে তারা সময়ে সময়ে মেনে নিতেন সোভিয়েত নেতাদের বিভিন্ন দাবি।

কিন্তু সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার পর রাশিয়ার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার ভারসাম্যমূলক নীতি থেকে সরে আসে ফিনল্যান্ড ও সুইডেন।

তারা ১৯৯৫ সালে একসঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নে (ইইউ) যোগ দেয় এবং পশ্চিমের সঙ্গে মিল রেখে ধীরে ধীরে তাদের প্রতিরক্ষানীতি সাজাতে শুরু করে। যদিও এ সময়ের মধ্যে সরাসরি ন্যাটোয় যোগ দেওয়ার কোনো পরিকল্পনা ছিল না দেশ দুটির।

ন্যাটোয় যোগ না দেওয়ার জন্য ফিনল্যান্ড ও সুইডেন উভয় দেশেরই ভিন্ন ভিন্ন কারণ রয়েছে। তবে এর মধ্যে ফিনল্যান্ডের সঙ্গে বিস্তৃত সীমানা থাকায় এ দেশটিকে নিয়েই চিন্তা বেশি রাশিয়ার।

শেয়ার করতে ক্লিক করুন