উইঘুর মুসলিম নির্যাতন বন্ধে চীনকে চাপ দিতে মুসলিম বিশ্বের প্রতি আহ্বান আলেম-ওলামাদের

536
শেয়ার করতে ক্লিক করুন

নিজস্ব প্রতিবেদক:
চীনের ইউঘুর মুসলিম নির্যাতন বন্ধে বেইজিংকে জোরালো চাপ দিতে মুসলিম বিশ্বের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন  আলেম-ওলামারা। পাশাপাশি চীনের পণ্য বয়কটের জন্য দেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তারা। শনিবার (১ অক্টোবর) সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর রুনি মিলনায়তনে এক প্রতিবাদ সভায় বক্তারা এ আহ্বান জানান। ইসলামিক মুভমেন্ট বাংলাদেশ আয়োজিত প্রতিবাদ সভায় সমমনা ১৩টি ইসলামিক দলের রাজনৈতিক জোট সম্মিলিত ইসলামী ঐক্যজোটের শীর্ষনেতারা বক্তব্য রাখেন।

সভায় বক্তারা বলেন, চীনের ২২ লাখ তুর্কি ও উইঘুর মুসলিমদের দীর্ঘদিন যাবৎ গণহত্যা, হত্যা, ধর্ষণ, নির্যাতন, যৌন নীপিড়ন, জোরপূর্বক আটকে রাখা হয়েছে। চীনা সরকার মানবাধিকার কর্মী, সংবাদকর্মী, জাতিসংঘের কর্মকর্তা এমনকি সংবাদ সংগ্রহে আগ্রহী এমন কাউকে চীনের উইঘুরে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না উল্লেখ করে বক্তারা বলেন, পুরো পৃথিবীকে অন্ধকারে রেখে চীনা সরকার এই সকল অপরাধ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। তারপরেও সামান্যতম সংবাদ বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। যেমন বিবিসি, আল-জাজিরা বিভিন্ন উপায়ে চেষ্টা করে কিছু কিছু সংবাদ সংগ্রহ করে প্রকাশ করতে সক্ষম হয়েছে। যাহা দেখে ও শুনে আমরা হতবাক হয়েছি। পুরো বিশ্বের মানুষ এটা মেনে নিতে পারেনি। আমরা চীনা সরকারের এ ধরনের গর্হিত অপরাধ কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

প্রতিবাদ সভায় সম্মিলিত ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মাওলানা আবু জাফর কাসেমি, ইসলামী মুভমেন্ট বাংলাদেশের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট খায়রুল আহসান, নেজামে ইসলাম বাংলাদেশের চেয়ারম্যান মাওলানা হারিসুল হক, বাংলাদেশে খেলাফত আন্দোলনের নায়েবে আমির মাওলানা আবুল কাশেম কাসেমী, সেক্রেটারি আলহাজ¦ আজম খান, নেজামে ইসলাম বাংলাদেশের সেক্রেটারি মুফতি আহসান উল্লাহ সালামি, বাংলাদেশ ইসলামী মুভমেন্টের যুগ্ম সম্পদাক নুর ই হেলাল, মুফতি রফিকুল ইসলাম বক্তব্য রাখেন।

বক্তারা বলেন, যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন সহ মিত্ররা চীনের উপর নামেমাত্র অবরোধ আরোপ করে দায়সারা দায়িত্ব পালন করেছে। কিন্তু চীনের দানব সরকার এই সামান্য অবরোধ ও চাপে ক্ষ্যান্ত হয়নি এবং হবেও না। তাকে থামাতে হলে বিশ্বের সকল দেশ মিলে জাতিসংঘে প্রস্তাব পাশ করিয়ে চীনের উপর ব্যাপক ভিত্তিক অবরোধ আরোপ করে চাপ তৈরি করুন। অন্যথায় চীনা দানব সরকার কোনভাবেই গর্হিত কর্মকাণ্ড হতে পিছপা হবে না। তারা অর্থনৈতিকভাবে ধনী দেশ হওয়ার কারণে সারা বিশের উপর ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করতে চায় এবং মুসলিমদের হত্যা, গণহত্যা, ধর্ষণ, যৌন নীপিড়ন ইত্যাদি অবলীলায় চালিয়ে গেলেও কেউ তাদের আটকাতে সাহস পায় না।

প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে বক্তারা বলেন, আমরা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বলতে চাই, আপনিতো এখন বিশ্ব নেতৃত্বের আসনে সমাসীন। আপনার অদম্য সাহস এবং সুদূরপ্রসারী নেতৃত্বে বাংলাদেশ অনেকদূর এগিয়ে গেছে এবং আপনি সারাবিশ্বের প্রশংসা ও কুড়িয়েছেন। আপনার সাহসিকতা সারাবিশ্বে প্রশংসিত, আপনার সাহসিক নেতৃত্ব মুসলিমদের পক্ষে যাবে সেটাই আমরা আশা করি। আপনিতো পারেন চীনের মুসলিম নির্যাতনের বিরুদ্ধে কথা বলতে। সাহস করে বলুন দেখবেন আপনার পাশে আরও অনেক বিশ্ব নেতা ও দেশ দাঁড়িয়ে যাবে। আর এতেই চীনের উইঘুরসহ বিভিন্ন অংশে বিপদগ্রস্থ আমার ভাইবোনেরা চীনা সরকারের করাল থাবা থেকে মুক্তি পাবে। আপনি নির্যাতিত মুসলিমদের পক্ষে কথা বলুন, মহান আল্লাহ তায়ালা অবশ্যই আপনাকে সাহায্য করবেন এবং এর প্রতিদান দেবেন।

অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, আসুন আমরা সকলে মিলে দানবের হাত থেকে বাঁচানোর জন্য সারাবিশ্বে চায়না পন্য বর্জনের আওয়াজ তুলি এবং নির্যাতিত তুর্কি ও উইঘুর মুসলিম ভাইবোনদের জন্য দোয়া করি তিনি যেন চীনের ফেরাউন সরকারের হাত থেকে তাদের মুক্তি দান করেন এবং বিজয়ীবেশে, ঈমানদার হিসেবে তাদের কবুল করেন।

শেয়ার করতে ক্লিক করুন