কেউ সমিতি থেকে ঋণ নিয়ে দোকানে মালামাল তুলেছেন। কেউ ঈদে ভালো ব্যবসার জন্য ভাঙ্গিয়েছেন সঞ্চয়। কিন্তু সব পরিকল্পনা স্বপ্নই রয়ে গেল। ভয়াবহ আগুনে সব হারিয়ে নিঃস্ব এখন রাজধানীর বঙ্গবাজারের প্রায় ৬ হাজার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী।
দোকান মালিক সমিতি বলছে, বঙ্গবাজার, এনেক্সকো টাওয়ার ও ইসলামিয়া মার্কেটসহ এ এলাকায় দোকান ছিল প্রায় ৬ হাজার। পুরোটাই পুড়েছে আগুনে। এর আর্থিক মূল্য প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকার ওপরে।
দোকান মালিক সমিতির সভাপতে হেলাল উদ্দিন বলেন, বঙ্গবাজার শপিং কমপ্লেক্সে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে দেড় হাজার কোটি টাকার বেশি ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে মঙ্গলবার দুপুরে তিনি বলেন, ‘এখানে পরিস্থিতি খুবই ভয়াবহ। টিনশেড মার্কেটের সব দোকান পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।’
খুচরা ও পাইকারি বিক্রেতাদের কাছে রাজধানীর অন্যতম জনপ্রিয় পোশাকের এই বাজারে প্রায় আড়াই হাজার দোকান ছিল। ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে দোকানদাররা অনেক টাকার মালামাল তুলে ছিলেন। সেখানে শাড়ি, শার্ট, প্যান্ট, সালোয়ার কামিজসহ সব ধরনের পোশাক বিক্রি হয়।
হেলাল উদ্দিন বলেন, বিক্রেতারা ঈদ উপলক্ষে কয়েকশ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছেন। এদিকে ভয়াবহ এ অগ্নিকাণ্ডের ক্ষতি কিছুটা কাটিয়ে উঠতে সরকারি সহযোগিতার দাবি বঙ্গবাজার ব্যবসায়ীদের।
মঙ্গলবার সেহরির পর পরই আগুন লাগে রাজধানীর বঙ্গবাজার মার্কেটে। ৬টার দিকে, আগুনের খবর পেয়ে দ্রুত পৌঁছায় ফায়ার সার্ভিস। একে একে যোগ দেয় অর্ধশতাধিক ইউনিট। অংশ নেন সেনা, নৌ, বিমান বাহিনী, বিজিবি, আনসার সহ আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
এসময় আশেপাশে জলাশয় না থাকায় আগুন নিয়ন্ত্রণে চরম বেগ পেতে হয় ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের। আগুনের তীব্রতা ও ধোঁয়ায় তৈরি হয় বাড়তি প্রতিবন্ধকতা। হেলিকপ্টার থেকেও ছিটানো হয় পানি।
আগুনের সূত্রপাত মার্কেটের ভেতরে হলেও দ্রুতই ছড়িয়ে পড়ে পাশের এনেস্ককো টাওয়ার, বরিশাল মার্কেট এবং ইসলামিয়া সুপার মার্কেটেও। এসময় ব্যবসায়ীরা তাদের মালামাল সরিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেন। তবে চোখের সামনে আগুনে সব পুড়ে যেতে দেখে ব্যবসায়ীদের অনেকেই কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।
৬ ঘণ্টার চেষ্টায় বঙ্গবাজারের ভয়াবহ আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। ঘটনা তদন্তে ৫ সদস্যের কমিটি করেছে ফায়ার সার্ভিস।