যেখান থেকে সূত্রপাত বঙ্গবাজারের আগুন

400
শেয়ার করতে ক্লিক করুন

রাজধানীর বঙ্গবাজারে লাগা আগুন প্রায় সাড়ে ছয় ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে এসেছে। তবে ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে উৎসুক জনতার ভির আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়ায়। এছাড়া পানির স্বল্পতা ও বাতাসের কারণেও আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে দেরি হয়েছে। আগুন লাগার কারণ এখনো জানা না গেলেও ওই এলাকার আদর্শ মার্কেট থেকে আগুনের সূত্রপাত ঘটেছে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস। পরে দ্রুতগতিতে পাশের মার্কেটগুলোর চারদিকে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। আদর্শ মার্কেট বঙ্গবাজারের আওতাধীন ৪টি মার্কেটের মধ্যে একটি।

মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) বিকালে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের একটি সূত্র এ তথ্য জানায়।

ফায়ার সার্ভিস সূত্র জানিয়েছে, মঙ্গলবার ভোর ৬টা ১০ মিনিটে ৯৯৯ থেকে তাদের কাছে কল যায়। তাদের জানানো হয় বঙ্গবাজারে আদর্শ মার্কেটে আগুন লেগেছে। পরে কয়েক মিনিটের মধ্যে আগুন চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে।

সূত্র আরও জানায়, প্রথমে ফায়ার সার্ভিস পৌঁছালে মার্কেটে প্রবেশ করতে বাধা ছিল। মার্কেটের চারদিকে যে তালাগুলো লাগানো ছিল সেগুলো ভাঙতে অসুবিধা হয়েছে ফায়ার সার্ভিসের। কারণ তালাগুলো ভেতরে ছিল। আগুনের ঘটনায় ফায়ার সার্ভিসের পাঁচ সদস্যসহ মোট ১২ জন আহত হয়েছেন। তারা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন।

এদিকে ফায়ার সার্ভিসের ১১টি গাড়ি এবং অধিদপ্তরের ভেতরে প্রবেশ করে ইআরসিসি ভবন ও রিসিপশন ভবন ভাঙচুর করে এবং ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের মারধর করে উচ্ছৃঙ্খল জনতা। বাইরে থেকেও উচ্ছৃঙ্খল লোকজন অধিদপ্তরের ভেতরে বৃষ্টির মতো ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। অগ্নিনির্বাপণের সময়ও আমাদের অনেক কর্মী মারধরের শিকার হন। পরে সেনাবাহিনী, র‌্যাব, পুলিশ ও বিজিবি সদস্যগণ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

দুপুর ১টায় গণমাধ্যমকর্মীদের উদ্দেশে ব্রিফ করেন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন, বিএসপি (বার), এনডিসি, পিএসসি, জি, এম ফিল। এ সময় তিনি দুঃখপ্রকাশ করে সকলের উদ্দেশে বলেন, আমাদের কর্মীরাতো নিজের জীবন দিয়ে আপনাদের রক্ষা করেন, তাদেরই কেন আঘাত করা হলো, কারা আঘাত করলো! এই উচ্ছৃঙ্খল লোকজন কারা? কেন তারা এমন আচরণ করলো!! আমাদের যেসব গাড়ি জাতীয় সম্পদ ও মূল্যবান জীবন রক্ষা করে, সেইসব গাড়ি কি উদ্দেশ্যে ভাঙচুর করা হলো?

এক প্রশ্নের জবাবে অধিদপ্তরের মহাপরিচালক জানান, ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। এই দুর্ঘটনার কারণ ও ক্ষয়ক্ষতি তদন্ত কমিটি নিরূপণ করবে।

আরেক প্রশ্নের জবাবে অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, বঙ্গবাজার মার্কেটকে ২০১৯ সালে ফায়ার সার্ভিস ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করে মার্কেটের বিভিন্ন স্থানে ব্যানার টাঙিয়ে দিয়েছিল। গণমাধ্যমে তার সংবাদও প্রচারিত হয়েছিল। এছাড়া তাদের বিভিন্ন সময়ে নোটিশ প্রদান করা হয়েছে অগ্নিনিরাপত্তা ব্যবস্থা সম্পর্কে।

প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালে বঙ্গবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সদস্যদের নিয়েও ফায়ার সার্ভিস অধিদপ্তরে বঙ্গবাজারের নিরাপত্তা বিষয়ে করণীয় নিয়ে সভা করা হয়। এ সময় তাদের করণীয় বিষয়ে বিভিন্ন রকম পরামর্শ প্রদান করা হয়।

শেয়ার করতে ক্লিক করুন