ধারাবাহিক দূর্নীতির পরও ধরাছোয়ার বাইরে বিএডিসির জিএম আবির হোসেন

401
শেয়ার করতে ক্লিক করুন

নিজস্ব প্রতিবেদক:
দুর্নীতির বরপুত্র বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের (বিএডিসি) আবির হোসেন বর্তমানে মহাব্যবস্থাপক (পাট বীজ) এবং একটি প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালকসহ (পিডি) বেশ কয়েকটি পদ দখল করে গড়ে তুলেছেন টাকার পাহাড়। অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন তিনি। ৬৮৮ কোটি টাকার মানসম্মত বীজ আলু উৎপাদন ও সংরক্ষণ এবং কৃষক পর্যায়ে বিতরণ জোরদারকরণ প্রকল্পের পিডি নিয়োগও পেয়েছেন অবৈধভাবে। ডিপিপি অনুযায়ী একজন তৃতীয় গ্রেডের কর্মকর্তা পিডি হওয়ার কথা থাকলেও অনেক যোগ্য কর্মকর্তাকে ডিঙিয়ে তিনি প্রকল্পের দায়িত্ব পেয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

সংস্লিষ্টরা অভিযোগ করেন মানসম্মত বীজ আলু উৎপাদন ও সংরক্ষণ এবং কৃষক পর্যায়ে বিতরণ জোরদারকরণ প্রকল্পে নতুন কোল্ড স্টোরেজ ও পুরাতন কোলেস্টোরেজ সংস্কার করার নামে ঠিকাদারদের সাথে আতাত করে তিনি হাতিয়েছেন কোটি কোটি টাকা। ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ কমিশন নিয়ে ঠিকাদার দিয়ে কাজ করিয়েছেন। বাস্তবে ক্রয়কৃত মালামাল ও সমাপ্ত কাজ গুলোর বেহাল অবস্থা। নিম্নমানের মেশিনারিজ যা অনেক হিমাগারে অচল মেশিনারিজ ক্রয় করে পাঠিয়েছেন। নীলফামারীতে বিএডিসির প্রতিষ্ঠিত স্বনামধন্য ডোমার আলুবীজ খামারে ১০০ কোটি টাকার ভূমি উন্নয়ন নামে ব্যয় করেছেন অথচ বাস্তবে কয়েক লাখ টাকার মাটিও ভরাট করা হয়নি। ঠিকাদারের সাথে ফিফটি ফিফটি পার্সেন্ট ভাগাভাগি করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে সমস্ত টাকা। আবির হোসেনের প্রকল্পের কাজগুলো তার বাস্তবে তদন্ত করলে তার প্রমাণ পাওয়া যাবে। বর্তমানে তিনি মহাব্যবস্থাপক পাট বীজ, অতিরিক্ত মহাব্যবস্থাপক আলু বীজ এবং প্রকল্প পরিচালকের দায়িত্বে রয়েছেন অবৈধ ভাবে।

তার চাকরি জীবন একটু লক্ষ্য করলে দেখা যায় দুর্নীতির কারনে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত ও নারী কেলেংকারীর মত জঘন্যতম অপরাধ। কুশাডাঙ্গা খামার দত্ত নগরে থাকাকালীন হাইব্রিড বীজ আত্মসাতের অভিযোগে তাকে প্রত্যাহার করা হয় এবং চাঁদপুর কোল্ড স্টোরেজ এ থাকাকালীন সময় আলু আত্মসাতের অভিযোগে চাকরি থেকে বহিষ্কার করা হয় তৎকালিন উপ-পরিচালক মোঃ আবির হোসেনকে। খারাপ ব্যবহার করলে শ্রমিকরা তাকে শারীরিকভাবে লান্ছিত করে রাতারাতি সেখান থেকেও তাকে প্রত্যাহার করা হয়। তারপর তদবির করে পোস্টিং নেন মধুপুর বীজ প্রক্রিয়াজাতকরন কেন্দ্রে। সেখানে এসে গড়ে তোলেন নারীদের নিয়ে জলসা ঘর এবং হঠাৎ একদিন তার মধুপুর বিএডিসি আবাসিক বাসায় রাতের বেলায় অবৈধ নারীর সাথে রোমাঞ্চকর অবস্থায় শ্রমিক ও এলাকার লোকজন তাকে হাতেনাতে ধরে ফেললে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও আশেপাশের মানুষকে টাকা দিয়ে প্রাণ নিয়ে কোনমতে তাকে ওখান থেকে বের করা হয়। মধুপুর বীজ প্রক্রিয়াজাতকরন কেন্দ্র মধুপুর থেকেও রাতারাতি থাকে সদর দপ্তরে সংযুক্ত করা হয়।

অবৈধ টাকার ক্ষমতায় এবং টাকার বিনিময়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ ৬৮৮ কোটি টাকার প্রকল্পের পরিচালক হন তিনি। বিগত পাঁচ বছরে প্রতি বছর শুধুমাত্র পলি নেট ক্রয় দেখি আত্মসাৎ করেছেন কয়েক কোটি টাকা অথচ একটি পলিনেট পাঁচ বছর ব্যবহার উপযোগী থাকে। এসমস্ত দুর্নীতি করে উত্তরায় তার ছয় তলা আবাসিক বাড়ি বর্তমান বাজার মূল্য ৭ থেকে ৮ কোটি টাকা, বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় একাধিক প্লট, ফ্লাট যার বাজার মূল্য প্রায় ২০ কোটি টাকা, রিভারভিউ বিল্ডার্স প্রকল্প রয়েছে তার দশ কোটি টাকার অধিক সম্পদ, মগবাজারে রয়েছে তার একাধিক ফ্ল্যাট যার বাজার মূল্য প্রায় ২০ কোটি টাকা এভাবেই দুর্নীতির বরপুত্রে পরিনত হয়েছেন কৃষিবিদ আবির হোসেন। এই কর্মকর্তা সাবেক পটুয়াখালী কৃষি কলেজ থেকে পাশ করে বিএডিসি তে যোগদান করেন। পারিবারিকভাবে তার শশুর জামাতের রাজনীতির সাথে সরাসরি জড়িত এবং তার বাবা এলাকায় জামাতের সদস্য বলে অভিযোগ রয়েছে। তার এই দূর্নীতির অভিযোগ খতিয়ে দেখার জন্য কৃষি মন্ত্রনালয় এবং কৃষি মন্ত্রনালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির কাছে আবেদন জানিয়েছেন অধিদপ্তরের সাধারণ কর্মকর্তা কর্মচারিরা।

শেয়ার করতে ক্লিক করুন