গণপূর্তের প্রধান প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা না হওয়ায় উদ্বেগ

323
শেয়ার করতে ক্লিক করুন

নিজস্ব প্রতিবেদক:

একাধিক তদন্তে দূর্নীতির অভিযোগ প্রমানিত হওয়ার পর গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ শামীম আখতারের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহনের উদ্যোগ নিয়েছিল গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রনালয়। মন্ত্রনালয়ের তদন্তে তার বিরুদ্ধে দূর্নীতির অভিযোগ প্রমানিত হওয়ায় বিভাগীয় মামলা দায়ের করার সেই উদ্যোগ থামিয়ে দিয়েছেন বিতর্কিত এই কর্মকর্তা। এঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে দুটি নাগরিক সংগঠন। মুভমেন্ট ফর সিটিজেন রাইটস এবং মিডিয়া ফোরাম ফর হিউম্যান রাইটস এন্ড এনভায়রনমেন্টাল ডেভেলপমেন্ট (মেড) নামের দুটি সংগঠন এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছে।

তারা জানিয়েছে ১৯ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে রামপুরায় সোহান শাহ নামে এক ব্যক্তি নিহত হওয়ার ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৫৭ জনের নাম উল্লেখ করে ২১ অক্টোবর ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আরবিয়া খানমের আদালতে মামলা দায়ের করেন নিহতের মা সুফিয়া বেগম। শুনানি শেষে ম্যাজিস্ট্রেট অভিযোগকারীর জবানবন্দি রেকর্ড করেন এবং রামপুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে এজাহার হিসেবে নথিবদ্ধ করতে বলেন। আদালতের আদেশে ঢাকা মহানগরীর রামপুরা থানায় একটি হত্যা মামলা রুজু হয়। মামলা নং ১৮, তারিখ-১৯ অক্টোবর ২০২৪ইং। ওই মামলার এজাহারভুক্ত ৫৪ নং আসামী গণপূর্তের বর্তমান প্রধান প্রকৌশলী মো: শামীম আখতার। হত্যা মামলার আসামী হওয়ার পরও তিনি বহাল তবিয়তে দায়িত্বে রয়েছেন।

বিবৃতিতে বলা হয় শামীম আখতারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির তদন্তে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন। গত ১৭ মে দুদক হাউজিং এন্ড বিল্ডিং রিসার্চ ইন্সটিটিউটকে শামীম আখতারের দুর্নীতির সুষ্ট তদন্তের স্বার্থে সকল তথ্য ও রেকর্ডপত্র চেয়ে একটি চিঠি ইস্যু করেছে। এছাড়া ৬ জনকে ডিঙ্গিয়ে চার বছর ধরে নিয়ম লঙ্ঘন করে তাকে প্রধান প্রকৌশলীর চলতি দায়িত্ব দেওয়ায় বৈষম্যের শিকার হয়েছেন মেধা তালিকায় তার ওপরে থাকা
কর্মকর্তারা। এনিয়ে বেশ কয়েকটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় একাধিক সংবাদ প্রকাশিত হলেও কোন ব্যবস্থা
গ্রহন না করা চরম অনিয়ম। দ্রুত বিভাগীয় মামলা না হলে এবিষয়ে আইনী সহায়তা চেয়ে উচ্চ আদালতে রিট করা হবে। ৬ জনকে ডিঙ্গিয়ে প্রধান প্রকৌশলী পদে চলতি দায়িত্বে ৪ বছরের বেশি সময় থাকার
বিষয়ে সরকারের নিয়মের লঙ্ঘনের বিষয়েও পত্রিকায় খবর প্রকাশিত হয়েছে। এক্ষেত্রে শীর্ষে থাকা ৬ জন বৈষম্যের শিকার হয়েছেন। অন্যদিকে মোহাম্মদ শামীম আখতারের অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে গত ২
সেপ্টেম্বর তদন্ত কমিটি গঠন করেছিল গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়। ১৫ দিনের মধ্যে কমিটিকে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দিলেও দেড় মাসেও

আলোরমুখ দেখেনি তদন্ত প্রতিবেদন: শামীম আখতারের অনিয়ম ও দুর্নীতি নিয়ে ‘গণপূর্তে পীর-মুরিদের চক্র’
শিরোনামে একটি জাতীয় দৈনিকে সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পরদিনই তার অনিয়ম ও দুর্নীতি তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়। কমিটিতে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (অডিট অনু বিভাগ) শাহনাজ সামাদকে আহ্বায়ক, উপসচিব (বাজেট অধিশাখা-৪) মো. মাহবুবুর রহমানvসদস্য সচিব এবং যুগ্ম সচিব (উন্নয়ন অধিশাখা-১৪) মো. জহিরুল ইসলাম খানকে সদস্য করা হয়। ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে অভিযোগ তদন্ত করে সুস্পষ্ট মতামতসহ মন্ত্রণালয়ের সচিবের কাছে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হলেও প্রধান প্রকৌশলী সিন্ডিকেট প্রভাব বিস্তার করে তদন্ত প্রতিবেদন ধামা দিতে দিতে সক্ষম
হয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

শেয়ার করতে ক্লিক করুন