এ দেশের ইতিহাস বিকৃতির জনক বিএনপি: ওবায়দুল কাদের
এ দেশের ইতিহাস বিকৃতির জনক বিএনপি, তারাই ইতিহাসের ফুটনোট জিয়াউর রহমানকে ইতিহাসের নায়ক বানানোর ব্যর্থ চেষ্টা করেছে।
সোমবার (২৮ মার্চ) সকালে তার বাসভবনে ব্রিফিংকালে বিএনপির নেতাদের উদ্দেশে এ কথা বলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
স্বাধীনতার ৫০ বছরে আওয়ামী লীগ নাকি যখনই ক্ষমতায় এসেছে তখনই ইতিহাস বিকৃতি করেছে–বিএনপির মহাসচিবের এমন অভিযোগের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, তার এ অভিযোগ চরম অসত্য, ভিত্তিহীন এবং পাগলের প্রলাপ ছাড়া আর কিছু নয়। আওয়ামী লীগ কখনো ইতিহাস বিকৃতি করে না; বরং প্রকৃত ইতিহাস জাতির সামনে তুলে ধরে বলেই বিএনপির গাত্রদাহের কারণ হয়।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, যার নেতৃত্বে বাঙালি জাতির হাজার বছরের আরাধ্য যে কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা আসে, সেই বঙ্গবন্ধু বিএনপির শাসনামলে হয়ে যায় এক নিষিদ্ধ নাম। মুক্তিযুদ্ধের রণধ্বনি ‘জয় বাংলা’ স্লোগানকে বিএনপি নিষিদ্ধ করে দেয়, বন্ধ করে দেয় ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ প্রচার।
গণমাধ্যম থেকে পাঠ্যপুস্তক পর্যন্ত সব জায়গা থেকে বঙ্গবন্ধুকে মুছে ফেলার অপপ্রয়াস চালানো হয় জানিয়ে ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, ইতিহাস বিকৃতির ঘৃণ্য চর্চা বিএনপি আবারও শুরু করেছে। বিএনপির নেতারা তাদের চেয়ারপারসন বেগম জিয়াকে দেশের প্রথম নারী মুক্তিযোদ্ধা এবং দণ্ডপ্রাপ্ত, পলাতক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে শিশু মুক্তিযোদ্ধা বানানোর মতো ঘৃণ্য অপপ্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে।
বিএনপির হাতে দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও ইতিহাস কিছুই নিরাপদ নয় বলেও দাবি করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। ইতিহাস চলে তার নিজস্ব গতিতে, এ চিরসত্য বিএনপি নেতারা হয়তো জানেন না, হাতের তালু দিয়ে যেমন সূর্যকে ঢাকা যায় না, তেমনি স্বাধীনতার ইতিহাসও আজ স্বমহিমায় সমুজ্জ্বল বলে মনে করেন তিনি।
বর্তমান প্রজন্ম প্রকৃত ইতিহাস আজ জানতে পারছে, যারা ইতিহাসের পায়ে শিকল পরিয়েছিল, আজ তাদের স্বরূপ উন্মোচিত হচ্ছে উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, তাই তো বিএনপি বেপরোয়া হয়ে উঠেছে, শুরু করেছে পুরোনো খেলা, চর্চা করছে অগণতান্ত্রিক পথ; কিন্তু জনগণ এখন সজাগ।
স্বাধীনতার ইতিহাস বিকৃতি ও স্বাধীনতার মূল্যবোধ বিনষ্টের অপচেষ্টা করলে বিএনপির বিরুদ্ধে জনগণ ঠিকই গর্জে উঠবে বলে বিশ্বাস করেন ওবায়দুল কাদের।
আওয়ামী লীগের সময় নাকি শেষ হয়ে এসেছে–মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এমন বক্তব্য প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগের সময় শেষ হয়ে আসেনি, সময় শেষ হয়ে এসেছে বিএনপির অপরাজনীতির।
আরও পড়ুন: ‘খালেদা জিয়া প্রথম নারী মুক্তিযোদ্ধা’, যে ব্যাখ্যা দিলেন ফখরুল
তিনি বলেন, জনগণের আস্থায় এখন আর বিএনপি নেই, জনগণ এখন আর বিশ্বাস করে না হাঁটুভাঙা, পরাশ্রয়ী বিএনপি এ দেশের জন্য ভালো কিছু করতে পারবে। নেতিবাচক রাজনীতির কারণে জনগণ বিএনপি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মনে করেন, সাম্প্রদায়িক কালের স্থানীয় সরকার নির্বাচনে বিএনপিকে জনগণের প্রত্যাখ্যান এবং তাদের আন্দোলনের ডাকে সাড়া না দেওয়ায় বিষয়টি আরও পরিষ্কার হয়ে গেছে। স্বাধীনতার ৫০ বছরে আমরা কী পেলাম? স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তির সুরে সুর মিলিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এমন প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, পরাধীনতার শৃঙ্খল মুক্তির অর্ধশতক পর যারা বলেন স্বাধীনতার ৫০ বছরে কী পেলাম, প্রকৃতপক্ষে তারাই স্বাধীনতাকে হৃদয়ে ধারণ করে কি না, চেতনায় ধারণ করে কি না–সে প্রশ্নই এখন চলে আসে?
ওবায়দুল কাদের দুঃখ প্রকাশ করে আবারও বলেন, যারা এ দেশে দীর্ঘদিন রাষ্ট্রক্ষমতায় ছিল, তারা যখন বলেন স্বাধীনতার ৫০ বছরে কী পেলাম, তখন আসলে এটাই প্রতীয়মান হয়, তারা এ দেশের মানুষের কল্যাণে কিছুই করেনি, তাই তারা দেশের কোনো ভালো অর্জন দেখতে পায় না।